ভারতীয় ভিসা! আগে তো আমি লাইনের ভয়ে কোন দিন Tourist Visa এর জন্য আবেদনই করতাম না। যখন কনফারেন্স আসত তখন শুধু Conference Visa এর জন্যই আবেদন করতাম। যদিও একই ফি কিন্তু মাত্র Single Entry! তাও শুধু লাইনের ভয়ে! কারণ Conference Visa তে কোন লাইন ধরতে হত না। আর শুধু জমা নিত গুলশানের শাখাটাতেই। মজা বটে। কিন্তু গত ১৩ই মার্চ যমুনা ফিউচার পার্কে Tourist Visa এর আবেদন জমা দিতে গিয়ে চক্ষু চড়ক গাছ! একি কোন লাইন নেই! মাত্র ৫ মিনিটেই জমা! কোন দালালের অত্যাচার নেই! যদিও বাইরে প্রচুর দালাল মানুষ ঠকানোর কাজে ব্যস্ত। তবে এবার আমার ভিসা আবেদন টা বাতিল হয়! আগে মনে হয় Conference Visa ছিল তাই ওরা আবেদন অতটা খুঁটিয়ে দেখেনি কিংবা আমি ঠিকই দিয়েছিলাম। তবে এবার আমার বেশ কিছু শিক্ষা হয়ে গেছে এতে। আজ এটা নিয়েই লিখবো বিস্তারিত।
Photo: 2″*2″ এর ভালো ছবি দিবেন।
Surname and Given Name: দ্বিতীয় বার মানে ২০১৭ সালে যখন আমি আবেদন করি সেটাই আমি Surname and Given Name উল্টা পাল্টা করে দিয়েছিলাম! তবুও তারা ভিসা দিয়েছে! এবং আমি কলকাতাও ঘুরে এসেছি! খুব ভয়ে ছিলাম এয়ারপোর্ট এ আটকায় নাকি ;P তাই আপনার পার্সপোর্ট এ যেভাবে আছে সেভাবেই লিখবেন।
Date of Birth: জন্ম নিবন্ধনে /NID তে যেভাবে আছে সেভাবেই দিবেন। পার্সপোর্ট, জন্মনিবন্ধন, NID যেন একই থাকে।
Place of Birth: জন্মনিবন্ধন এ যা আছে তাই দিবেন। মানে সেই শহরেরই নাম লিখবেন।
C. Applicant’s Contact Details (Most Important Part): এ অংশে Present address এবং Permanent Address দিতে হয়। আপনার পার্সপোর্টে Permanent Address যা আছে তাই দিবেন। হুবহু যেন একই থাকে। আর Present address এর জন্য বিদ্যুৎ বিলে কপিতে যা আছে তাই দিবেন। হুবহু যেন একই থাকে।
একটা উদাহরণ দেই। আপনার বিদ্যুৎ বিলে আছে 1/1 Bashbari Rd, Mohammadpur, Dhaka আপনার এখানে বিস্তারিত ভাবে Flat no: 5TH, House NO: 01, Road No: 01, Mohammadpur, Dhaka দেওয়ার কোন দরকারই নেই। বিদ্যুৎ বিলে কপিতে যা আছে তাই দিবেন। হুবহু যেন একই থাকে।
E. Port Of Arrival ও Port of Exit (Most Important Part): এই দুটা একই দিবেন। যেমন Darjeeling ভ্রমণের ইচ্ছা থাকলে CHANGRABANDHA দিবেন। কখনই CHANGRABANDHA/JAYGAON বা এধরণের পোর্ট নির্বাচন করবেন না। এগুলো ট্রানজিট পোর্ট। নেপাল ও ভূটানের জন্য কি পোর্ট দিবেন তা ছবিতে দেখতে পারেন।
Places to be Visited: CHANGRABANDHA পোর্ট এর জন্য Darjeeling, Sikkim দিতে পারেন। আবার ডাউকি দিবেন মেঘালয় ঘুরে আসতে চাইলে। পোর্ট সম্পর্কিত City এর নাম দিবেন তাতে আপনারই সুবিধা হবে।
Profession/Occupation Details: এটা যার যে পেশাই সেটিই দিবেন। ভুয়া কাগজ পত্র দেওয়ার চেস্টা করবে না। বেকার হলে লিখে দিন আপনি অন্যের উপার্জনের উপর নির্ভরশীল। শিক্ষার্থী হলে শুধু আপনার আইডি কার্ড এর ফটোকপি দিয়ে দেন আর কিছুই লাগবে না Tourist Visa এর জন্য। আপনি যদি Freelance Web Developer হন তাহলে Upwork এর Earning Certificate পেশাগত প্রমাণ হিসাবে দিতে পারেন। যদি তা না থাকে তাহলে একটা আবেদন পত্র লিখে তাতে লিখে দেন কি করেন। কিন্তু ভুলেও মিথ্যা কিছু বানায় দিবেন না।
H. Address of Place of Stay / Hotel: ইন্টারনেট সার্চ করলে যে জায়গায় যাবেন সেখান কার কোন হোটেলের ফোন নম্বর, ইমেইল, ঠিকনা দিয়ে দিন।
I. Details of Two Reference: এটার জন্য BANGLADESH অংশেরটা আমাদের কাছে ব্যাপার না। কিন্তু India এর জন্য কোন লোকের নাম দিন। আশেপাশের লোকজন আবেদন করলে তার থেকে শুনে নিন যদি আপনার পরিচিত না থাকে। আমার জন্য এটা সুবিধা ছিল কারণ আমার অনেক ভারতীয় বন্ধু আছে। তারপরও আমি Darjeeling এক লোকের টা দিয়েছিলাম আমার বন্ধুর ফরম দেখে। পুরো ফরম এর আমি এ তথ্যটাই না জেনে দিয়েছিলাম। আলসেমি করে পরে ঠিক করি নাই। তবে এটা আসল দেওয়া ভালো।
Bank Statement/Dollar Endorsement: আপনি যদি প্রথম বার আবেদন করে তাহলে বাংলাদেশের যে কোন বানিজ্যিক ব্যাংক থেকে ১৫০-২০০ ডলার Endorsement করে নিলেই হবে। মনে রাখবেন বানিজ্যিক ব্যাংক ছাড়া অন্যের Endorsement এখন আর গ্রহণ করা হয় না। আর Endorsement করে একটা সার্টিফিকেটও নিতে পারেন। এটায় মনে হয় ৫৭০ টাকা নেয়। সার্টিফিকেট জমা দিলে পার্সপোর্ট ফেরত দেওয়ার সময় তা দিয়ে দেয়।
এখন কাগজ পাতি কিভাবে সিরিয়াল করে জমা দিবেন? এটাও একটা স্মার্টনেস। যে জমা নিবে তাকে কষ্ট না দেওয়া। নিচের সিরিয়াল অনুসারে সাজিয়ে জমা দিবেন। NID না থাকলে জন্ম নিবন্ধন দিতে ভুলবেন না। আর পার্সেপোর্ট এর শুধু ২ এবং ৩ নং পাতা ফটোকপি করে দিবেন।
ভিসা ফি: www.ivacbd.com এর সাইটে গেলেই আপনি এমন লাল চিহ্নিত একটি অংশ পাবেন।
অথবা https://payment.ivacbd.com/ এখানে গিয়েও আপনি পে করতে পারেন। এখানে আপনাকে SELECT A MISSION থেকে নির্বাচন করতে হবে। এরপর ENTER YOUR WEB FILE NUMBER দিবেন। এরপর ভিসা টাইপ টিও দিবেন। এরপর পে করায়ে দিবেন। বিকাশ, রকেট, যে কোন ব্যাংক এর কার্ড দিয়ে পে করতে পারবেন। আর ফি ৮০০ + ২৪ ( ২৪ টাকা প্রসেসিং চার্জ)। তারা পুরো ৮২৪ টাকাই কেটে নিবে।
আশা করি এ কয়টা নির্দেশনা মানলেই আপনি চ্যাল চ্যালায়ে ভিসা পাবেন। ভারতীয় কর্মকর্তারা বসেই আছে আপনাকে ভিসা দেওয়ার জন্য কারণ তারা জানেই আপনি তাদের দেশে গেলে মালটু খরচ করবেন আর তা তাদের জন্য কল্যাণকর।
আপনার ভারত ভ্রমণ শুভ হোক।
ধন্যবাদ
आपका धन्यवाद
Terima Kasih