এই ব্লগের শিরোনাম দেখে অনেকেই অনেক কিছু ভাবচ্ছে! আচ্ছা, তারা ভাবতেই থাকুক আমি আমার লেখা চালিয়ে যাই।
সেই ২০১১ সাল থেকে যখন আমার Freelance Career শুরু করেছি তখন থেকেই প্রায় USA এর Banking জগৎ নিয়ে বেশ ভালো রকম কৌতুহল ছিলো। কেনই বা থাকবে নাহ? পৃথিবীর তথ্য প্রযুক্তি দুনিয়ার দেশের ব্যাংক ব্যবস্থা বলে কথা!
তো ভালো। আমি জুলাই ২৫ এ আসি এরপরের দিন ই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে ছবি, পার্সপোর্ট আর বিভিন্ন ডকুমেন্ট সাথে নিয়ে যাই ব্যাংকে। দুঃখের কথা হল করোনা মহামারীর জন্য তারা এখন Appointment না থাকলে কাজ করে নাহ। আমাকে জুলাই ৩০ এ Appointment দিলেন।
বেশ আমি জুলাইয়ের ৩০ তারিখে আমাকে দেওয়ার নির্ধারিত সময়ে হাঁটি হাঁটি পা পা করে চলে গেলাম ব্যাংকে। প্রস্তুতি মত ফরম পূরণের জন্য কলম, ছবি, বিভিন্ন জিনিস যেমন passport এই সেইয়ের এক গাদা ফটোকপি নিয়ে গিয়েছি!!
তারপর ভদ্র মহিলা (ব্যাংক কর্মকর্তা) আমার থেকে Passport, আরও কিছু Document চেয়ে নিলেন ওনিই সব দেখে পূরণ করলেন ওনাদের System এ সরাসরি (কোন ফরম পূরণ করে নাহ 😉 )। এরপর passport আর ওসব document scan করে নিলেন। এরপর আমাকে তাদের System এ Card এর PIN সেট করতে দিলেন, তারপর আমার online banking এর জন্য user id, password দিতে বললেন! ব্যাস কাজ শেষ! Account খুলতে ছবিও নিলো না!!
তারপর কিছু প্রশ্ন করলামঃ
-> কার্ড ক দিন পর পাবো? — তুমি যদি ২-৩ দিনে চাও তাহলে বাড়তি $5 দিতে হবে। আর ৫ দিনে হলে ফ্রি! আমিও সুন্দর ৫ দিনের অপশন ই নিলাম।
-> বললাম Checkbook বা Withdraw slip কবে দিবা? — সে আমাকে দেখায় দিলো ব্যাংকেই এক পাশে Deposit slip, withdraw slip এসব থাকে। তাই আলাদা করে দেওয়ার কিছু নেই।
-> ইচ্ছা করেই বললাম তোমাদের Online banking চালু করতে সময় নাও কিনা? — হেসে বললেন তুমি এখনই আমাদের website/app এ লগইন করতে পারো।
এবার কিছু অতি জ্ঞানী মানুষদের উত্তর দেই।
১) বাংলাদেশের বাইরে কেন পড়তে আসা উচিত?
– হ্যাঁ এটা সত্য এখন অনেক বাংলাদেশী শিক্ষার্থী Fresh/৩-৪ বছরের অভিজ্ঞতা দিয়ে বিদেশে জব পায়। তাহলে কেন পড়তে আসব? সে উত্তর এতক্ষণেও পান নাই!!
তাহলে বলেই দেই, আপনি যদি কোন উন্নত System জীবনে না ই দেখেন তাহলে উন্নত কোড বা চিন্তা করে ভালো Product কি করে output দিবেন সেটা আপনার কাছেই প্রশ্নটা রেখে দিলাম।
তারপরও মূর্খের মত বিভিন্ন মন্তব্য করবে।
২) বাংলাদেশের বাইরে কেন পড়তে আসা উচিত?
– কি ভাবলেন এক প্রশ্ন দুবার কেন? ভাবতেই থাকেন। আসলে আমাদের দেশের শিক্ষাব্যাবস্থা এতটাই মুখস্ত নির্ভর যে আমাদের সৃজনশীলতা পুরোপুরি নষ্ট করে দেয় এজন্য আমাদের দেশের Undergrad, Grad করেও মানুষ ভিন্ন কিছু চিন্তা করার ক্ষমতাই রাখে নাহ। তাই উপরের সারির কিছু দেশে যদি ২-৪ বছর কিছু পড়াশোনাও করে যান আপনার বিষয় সম্পর্কিত তাহলে ধরেই নেওয়া যায় আপনার চিন্তা ভাবনা অনেকটাই বিকশিত হয়।
৩) বাংলাদেশের বাইরে কেন পড়তে আসা উচিত?
– আবার একই প্রশ্ন!! আজব নাহ? আমার গল্প থেকে বুঝতে পারছেন তাহলে একটা ব্যাংক কতটা Paper Less কাজ করে এবং PIN, Internet banking এসব Approval নামে আলাদা সময় নষ্ট করে নাহ। এমনকি আজাইরা ফরম পূরণের নামে কাগজ ও সময় কোনটাই নষ্ট করে নাহ! ভাবতে পারেন? এসব কি Rocket Science? মোটেই নাহ। আমার বিশ্বাস এমন Secure Banking Solution তৈরী করার মেধা বাংলাদেশের অনেক Software Engineer এর আছে। অথচ তাদের Security ব্যাবস্থা Right click off ;P Password ৩ মাস পরপর পাল্টাতে হবে!! আরও যে কত হাস্যকর Security ব্যবস্থা আছে তা দেখলে হাসি পায় মাঝে মাঝে।
উপরন্তু বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতে গেলে কাগজের স্তুপ দেখতে পাবেন 🙂 তাতে কত মানুষের Confidential Information থাকে ধারণা করতে পারেন? অথচ খড়ের গাদার মত ওসব থাকে!!
Bank সংশ্লিষ্ট মানুষজন চাইলেই কিন্তু এসব পরিবর্তন করতে পারে! কিন্তু কে শোনে কার কথা? বললেই বলবে “কাগজ কি মিয়া তোমার থেকে টাকা নিয়ে কিনি?”
আজকের গল্প এখানেই শেষ। দেখা হবে আবার আগমী পর্বে। চাইলে Like, Comment, Follow করে পাশে থাকতে পারেন।